সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রখ্যাত চিকিৎসক অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে গত বুধবার বদরুদ্দোজা চৌধুরী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। সেদিন তাঁর মেয়ে চিকিৎসক শায়লা চৌধুরী জানান, আগে থেকেই তাঁর বাবার ‘স্কিমিক হার্ট ডিজিজ’ ছিল।
সকাল আটটার পরে হাসপাতাল প্রাঙ্গণে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাদ জোহর বারিধারায় ৮ নম্বর সড়কে বায়তুল আতিক জামে মসজিদে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা হয়।
আগামীকাল রোববার সকাল ১০টার দিকে মুন্সিগঞ্জের স্টেডিয়ামে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর তৃতীয় জানাজা হবে। বাদ জোহর গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় চতুর্থ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।
রাজনীতিবিদ মাহী বি চৌধুরীর ফেসবুক পোস্টে জানা যায়, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বদরুদ্দোজা চৌধুরী গত ১৩ জুলাই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর প্রতিষ্ঠিত উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তিনি সেখানে কয়েকবার চিকিৎসাধীন ছিলেন।
অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব। এ ছাড়া জাতীয় সংসদের উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অনুরোধে বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৭৯ সালে বদরুদ্দোজা চৌধুরী তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া—দুই সরকারের সময়ই মন্ত্রী ছিলেন। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপালন করেছিলেন। বিটিভিতে তাঁর ‘আপনার ডাক্তার’ অনুষ্ঠান খুবই জনপ্রিয় ছিল।
মুন্সিগঞ্জ-১ আসন থেকে বদরুদ্দোজা চৌধুরী পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দুবার জাতীয় সংসদের উপনেতা এবং একবার বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালে তিনি খালেদা জিয়ার সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশের ১৫তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী। রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
পরে ২০০৪ সালের ৮ মে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিকল্পধারা বাংলাদেশ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দলটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর ছেলে মাহী বি চৌধুরী দলের মুখপাত্র ও প্রেসিডিয়াম সদস্য।
0 Comments